লক্ষ্মীর আর এক নাম শ্রী বা সৌন্দর্য্য। লক্ষ্মী যেখানে বিরাজমান থাকেন না সেখানে হতশ্রী বা লক্ষ্মীছাড়া হয়ে পরে। লক্ষ্মী এসেছে লক্ষ -ধাতু থেকে ,অর্থ -অঙ্কন ,চিহ্নিকরন ,জ্ঞান ,দর্শন ,আলোচনা। তাহলে ধাতুগত সমস্থ অর্থ নিয়ে ভাবলে লক্ষ্মী মানে বলা যায় -যিনি দেখেন ,আলোচনা করেন ,গুনাগুন বিচার করেযেখানে যেটি যেমনভাবে প্রযোজ্য তাকে সম্যক ভাবে চিহ্নিত করে রাখেন। তিনি নারায়নের সঙ্গে বৈকুন্ঠে অবস্থান করেন। এই বৈকুন্ঠ কী ? বিগত কুন্ঠা যেখানে অথাৎ কুন্ঠা যেখানে নেই এমনতর যে মানসিক অবস্থা অবস্থা তাই বৈকুন্ঠ। কুন্ঠা অর্থে সমস্ত রকম সঙ্কোচ , সুংকীর্ণতা ,হীনতা ইত্যাদি। এগুলি যেখানে থাকে না তাই বৈকুন্ঠ।নারায়ণের সঙ্গে লক্ষ্মী অবিচ্ছেদ্যভাবে অবস্থান করেন। নারায়ণকে যে অগ্রাহ্য করে ,লক্ষ্মী তার কাছে অবস্থান করেন না। তার পূজাও গ্রহণ করেন না, তার কাছ থেকে লক্ষ্মী চাঞ্চল হয়ে সরে যান।
নারায়ণকে বাদ দেওয়া মানে মানুষের সাথে অসৎ ব্যবহার করা ,মানুষকে সইতে -বইতে না পারা ,কাম -ক্রোধ -লোভ ইত্যাদি র বশীভূত হয়ে চলা এবং তার জন্য যা 'খুশী তাই করা ,ইত্যাদি। এরকম চলনে চললে নারায়ন সেখান থেকে অন্তর্দ্বান করেন। "যেখানে নারায়ন নেই সেখানে লক্ষ্মী হাতে পারে ? " আর ,লক্ষ্মীকে অপমান করে ,জোর করে আটক করে যদি কেউ রাখে ,তবে রাবনের মত দশা হয় বোধ`হয়। " - কিন্তু লক্ষ্মী কে কেউ তুষ্ট রাখতে পারলে নারায়ণকে সে পাবে -পাবে নিশ্চয়।
টাকা পয়সা যারা উপার্জন করতে চায় ,তাদের নারায়নের সেবা করতেই হয়। আর নারায়নের মধ্যে আছে নরের অয়ন -মানুষের জীবনপথ। তাই -নারায়ন পূজা মানে মানুষের সেবা করা ,মানুষগুলি যাতে সক্ষম তাজা থাকে তাই করে চলা। কিন্তু টাকা -বাগানোর ফন্দি নিয়ে যারা মানুষের সেবা করে ,তারা শেষ পৰ্যন্ত ব্যর্থ হয়।
লক্ষ্মীর আর এক নাম 'ইন্দিরা ', ইন্দিরা এসেছে ইন্দ -ধাতু থেকে ,মানে পারমৈশ্বয্য। তিনি পরম -ঐশর্য্যবতী ,তাই তিনি ইন্দিরা।
লক্ষ্মীর বাহন হল পেচক ( প্যাঁচা ), কেন ?
কারন প্যাঁচা হল অন্ধকারে জীব। সে রাতেই চরে বেড়ায়। সে মাংসাশী এবং হিংস্ৰ। এই পেচক -চরিত্রের মানুষ সংসারে আছে। মা লক্ষ্মী তাদের বাহন করে রাখেন। তার মানে নিজ কর্ত্ত্ত্বাধীনে রেখে তাদিগকে মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করতে শেখান ,সাথে সাথে তাদের স্বভাব সংশোধনেরও চেষ্টা করেন।
No comments:
Post a Comment