Pages

Friday, November 17, 2017

মা কালীকে জানুন

মা কালীর বর্ননা  : 

এই কালী কে ? কথিত আছে , তিনি দূর্গা দেবীর ললাট থেকে আবির্ভূতা দেবীবিশেষ। চন্ড নামক অসুরকে বধ করার সময় মায়ের মুখ ক্রোধে কৃষ্ণবর্ণ হয়ে উঠলে তাঁর ললাটদেশ থেকে করাল বদনা ,আসিপাশযুক্ত এই কালী আবির্ভূত হন।  কালীর মধ্যে কল (ধাতু) আছে। কল-ধাতুর মধ্যে আছে গতি ,গণনা ,শব্দ ,সংখ্যান। শ্রীশ্রী ঠাকুর বললেন কালী মানে সংখ্যায়নী গতিসম্পন্না যিনি। অথাৎ গুনিত হতে হতে বেড়ে`চলেন  যিনি। কী গুনিত হয়? মায়ের যা সত্তাসম্পদ অথাৎ মায়ের স্নেহমমতা ,কল্যাণময়ী প্রকৃতি ,সত্তাসংঘাতি শক্তির বিরুদ্ধে পরাক্রম ,তাই গুনিত হয়। মায়ের পূজা যারা করে ,মাকে যারা ভালোবাসে ,তাদের এইসব গুন্ বৃদ্ধি পায় ,অন্তরে তাদের মহাশক্তির জাগরণ ঘটে।
তাঁর দুই হাতে যেমন খড়গ ও নরমুণ্ড -ধ্বংসের প্রতীক ,অপর দুই হাতে আবার বর ও অভয় -তাঁর পদাশ্রিত সন্তান গনের জন্য। মায়ের আছে আট যোগীনি। তাদের মধ্যে ছয়টি নাম হল ভীষণা ,চন্ডী ,করলা ,শূলিনী ,হন্ত্রী ,ত্রিপুরা। এগুলি যদি আমরা প্রতীক হিসাবে গ্রহণ করি তাহলে বলা যায় ,এ সব ই হল অকল্যাণ কে নিরোধ করার জন্য মায়ের শক্তি। এ ছাড়া আরো মায়ের দুটি যোগিনী আছে ,তাদের নাম কর্ত্রী এবং বিধাতৃকা ,মানে যে শক্তি সব কিছু গড়ে তোলেন ,সাজিয়ে দেন।
         

          শিবের বুকের উপর উপবিষ্টা মায়ের সম্পকে বিভিন্ন মত আছে। কিন্তু ঠাকুর বললেন -- শিবের বুকের উপর দন্ডায়মানা কালী -এটা সৃষ্টিতত্বের প্রাথমিক পর্য্যায়ের একটা ইঙ্গিত। সাংখ্য মতানুসারে,পুরুষ অক্রিয় (শব ).প্রকৃতির সংস্পর্শে তিনি সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তখন সৃষ্টি শুরু হয়। পুরুষ স্থিরধর্মী ,ইংরেজিতে বলে 'পজিটিভ ' : আর নারী চরধর্মী -নেগেটিভ। এই পজিটিভ আর নেগেটিভ মিলনের ফেলে সৃষ্টির সূচনা হয়। বৈদ্যুতিক বাতির ক্ষেত্রেও পজেটিভ ও নেগেটিভ একত্রে হওয়ার  ফলে আলো জ্বলে।
তারই প্রতীক ঐ পজিটিভ ,নিষ্ক্রিয় শিবের বুকে নেগেটিভ চঞ্চলা কালির পদ চায়না। শিব মানেই সকলের ও সব-কিছুর শয়ন স্থান (শী -ধাতু ),অথাৎ যাঁর মধ্যে বিশ্বদুনিয়ার সব কিছু অবস্থিত ,অখন্ডবিশ্বসত্তা। তা এক এবং অদ্বিতীয় ,তা চিরকাল ছিল ,আছে এবং থাকবে।  কিন্তু তা কখনোই এই বিচিত্র শোভা নিয়ে দৃশ্যমান জগৎরূপে ফুটে উঠতে পারত না -যদি নাকি তার বক্ষে প্রকৃতির চরমানতা সংযুত্ত না হত। 


No comments:

Post a Comment